সবাইকে আরেকবার স্বাগতম জানিয়ে, অনেক দিন পর আবারও শুরু করছি আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে লেখাটি। নানান ব্যস্ততা, অসুস্থ্যতা ইত্যাদি কারণে এই পর্ব লিখতে দেরি হয়ে গেলো। আন্তরিকভাবে দুঃখিত। যারা খোঁজ-খবর রেখে, অসুস্থ্যতার সময় দু’টো শান্ত্বনার কথা বলে আমার মনটাকে প্রফুল্ল করে তুলেছিলেন তাদের সবার কাছেই কৃতজ্ঞতা জানাই। দেরি হওয়া সত্বেও আমার টিউনের জন্য অপেক্ষা করেছেন ধৈর্য়্য ধরে- তাদেরকেই আমি প্রকৃত অধ্যবসায়ী মনে করি। তাদের নিয়েই ভবিষ্যতে প্ল্যান আছে। কারণ, আপনারাই পারবেন। ৫০০ জন অযথা স্প্যামারের চেয়ে ৫ জন প্রকৃত পরিশ্রমী পাঠকই যথেষ্ট। কারণ শেষ পর্য়ন্ত আপনারাই পারবেন। পারার জন্যই আপনারা জন্মেছেনে। আপনাদের জন্য শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও চেষ্টা করে যাবো, ইনশাল্লাহ।
তো কথা না বাড়িয়ে আজকের পর্ব শুরু করা যাক। গত পর্বে লিখেছিলাম নিস সাইটের জন্য পারফেক্ট ডোমেইন এবং বেস্ট হোস্টিং কীভাবে পাবেন তা নিয়ে। অনেকে শুরুতে ইনভেস্ট করতে চান না। বা করার সামর্থ হয়তো নেই। তাদের জন্যই মূলত আজকের পর্ব- পেইড ডোমেইন ও হোস্টিং-এর বিকল্প [যাদের ডোমেইন হোস্টিং কেনার সামর্থ নাই]।
পেইড ডোমেইন এবং হোস্টিং-এর সাথে অন্যকিছুর তুলনা চলে না। কিন্তু বিকল্প আছে। সেই বিকল্প একাধিক মাধ্যমগুলোই আপনাদের কাছে তুলে ধরা হবে। ইনশাল্লাহ আপনারা উপকৃত হবেন।
বিকল্প পদ্ধতি কি কি আছে?
অনেক আছে। কিন্তু আপনাদের জন্য সহজসাধ্য এবং কম সময়সাপেক্ষ হবে এরকম কিছু ওয়ে আপনাদের জন্য এখানে তুলে ধরছি আমি। যেমন:
- ওয়ার্ডপ্রেস.কম
- ব্লগস্পট.কম
- ইউটিউব
- ফেসবুক
- ক্রেইগলিস্ট
- অন্যান্য
ফ্রি ওয়ার্ডপ্রেস.কম
http://www.wordpress.com থেকে ফ্রি সাইট বানিয়ে নিতে পারেন। ওয়ার্ডপ্রেস থেকে ৩ জিবি হোস্টিংসহ একটি ওয়েব ২.০ সাইট পেতে পারেন সম্পূর্ণ ফ্রি। চাইলে একাধিক সাইটও বানিয়ে নিতে পারেন। শুরুতে একটি সাইট বানাতেই বলবো আমি। ওয়ার্ডপ্রেস ডট কমে সাইট বানানোর জন্য এই ভিডিও টিউটোরিয়ালটি দেখুন। মাত্র এক ঘণ্টা সময় নিয়েই আপনি সুন্দর একটি সাইট বানাতে পারবেন আপনার নিস সাইট হিসেবে:
ফ্রি ওয়ার্ডপ্রেস.কম-এর সুবিধা
++ এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।
++ খুবই অল্প সময়ে একটি সাইট বানাতে পারবেন।
++ কোনো কোডিং জ্ঞান প্রয়োজন নেই।
++ পেইড থিম বা অতিরিক্ত প্লাগিন প্রয়োজন হয় না।
++ খুবই অল্প সময়ে একটি সাইট বানাতে পারবেন।
++ কোনো কোডিং জ্ঞান প্রয়োজন নেই।
++ পেইড থিম বা অতিরিক্ত প্লাগিন প্রয়োজন হয় না।
ফ্রি ওয়ার্ডপ্রেস.কম-এর অসুবিধা
-- টার্মস এন্ড কন্ডিশনে অল্প একটু এদিক সেদিক হলেই সাইট অটো ডিলিট হয়ে যেতে পারে।
-- ইনফরমেটিভ আর্টিক্যাল ছাড়া অনলি প্রমোটেড আর্টিক্যাল/রিভিউ থাকলে সাইট ডিলিট হয়ে যেতে পারে
-- নিজের ইচ্ছে-স্বাধীনমতো সাইটের ডিজাইন করা সম্ভব হয় না
-- প্রয়োজন অনুযায়ী প্লাগিন এড করা সম্ভব হয় না।
-- এসইও নিজের স্বাধীনমতো করা যায় না
-- ইনফরমেটিভ আর্টিক্যাল ছাড়া অনলি প্রমোটেড আর্টিক্যাল/রিভিউ থাকলে সাইট ডিলিট হয়ে যেতে পারে
-- নিজের ইচ্ছে-স্বাধীনমতো সাইটের ডিজাইন করা সম্ভব হয় না
-- প্রয়োজন অনুযায়ী প্লাগিন এড করা সম্ভব হয় না।
-- এসইও নিজের স্বাধীনমতো করা যায় না
ব্লগস্পট.কম
ওয়ার্ডপ্রেস.কম-এর মতোই একটা সার্ভিস হচ্ছে ব্লগস্পট ডট কম। এটি বিগ জি অর্থাৎ গুগলের একটি সার্ভিস। http://www.blogspot.com গুগলের সার্ভিস হওয়ায় তুলনামূলক ওয়ার্ডপ্রেস ডট কমের চেয়ে এসইও’র দিক থেকে ব্লগস্পট ভালো। সাইট দ্রুত গুগলে ইনডেক্স হয়। ট্রাফিক পেতে সুবিধা হয়। নিচের ইউটিউব ভিডিওটাই যথেষ্ট ব্লগস্পটে একটি সুন্দর সাইট তৈরি করার জন্য। দেখে নিন:
ব্লগস্পটের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলোও অনেকটাই ওয়ার্ডপ্রেসের মতোই। সো আলাদা করে আর লিখলাম না।
ইউটিউব
খুবই চমৎকার একটি প্লাটফর্ম। ইউটিউবের মাধ্যমে কাজ করে অনেক ভালো ইনকাম করা সম্ভব আমাজন থেকে। কীভাবে? খুবই সহজ। আমাজন থেকে প্রোডাক্ট খোঁজে বের করুন। সেগুলোর উপর ভিডিও রিভিউ তৈরি করুন। তারপর সেগুলো ইউটিউবে এড করুন। ভিডিওগুলোর এসইও করুন। ভিডিওর ডেসক্রিপশনে আমাজন এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করুন।
এই মাধ্যমে আমি কখনও কাজ করিনি। তবে বাংলাদেশ থেকে অনেকেই করছেন। এবং ভালো ইনকাম করছেন। সুতরাং আপনিও চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
ফেসবুক
ফেসবুক এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি শোশ্যাল মিডিয়া। এখানে আপনি সময় নষ্ট করতে পারেন। আবার সময়টাকে কাজে লাগিয়ে গুরুত্বপূর্ণও করে তুলতে পারেন। সবকিছুই নির্ভর করছে আপনার উপর। আপনার যদি একটি পেজ থাকে ভালো, যেমন আপনার একটি ফেসবুক ফ্যানপেজ আছে বেবি প্রোডাক্টের উপর। সেখানে আপনি নিয়মিত বিভিন্ন টিপস লিখলেন বেবিদের খেলনা কিংবা দরকারি বিষয় নিয়ে। এভাবে যদি ২/৩ মাস কাজ করেন দেখবেন আপনার ফেসবুক ফ্যানপেজে ১০/১২ হাজার লাইকস আছে। যারা বেবি রিলেটেড প্রোডাক্টের প্রতি আগ্রহী। এবার যদি আপনি তাদেরকে কোনো অফার দেন, যেমন এই প্রোডাক্টটি ভালো। এই এই সুযোগ-সুবিধা আছে তাহলে দেখবেন সহজেই তারা বিভিন্ন প্রোডাক্ট কিনছেন। প্রতি মাসে যদি ১% লোকও আপনার প্রমোটেড প্রোডাক্ট কিনে তাহলে ১০০-১২০ টি প্রোডাক্ট সেল হবে। যার কমিশন কম করে হলেও ৫০০ ডলার হবে।
আর প্রতি মাসে লাইকারের সংখ্যা যেমন বাড়বে, আপনার সেলের পরিমাণও বাড়বে। ফেসবুক ব্যবহার কেমন ভেলুয়েবল হয়ে উঠছে দেখেছেন? এভাবে ফেসবুকে গ্রুপও তৈরি করতে পারেন। কিংবা অনেক বড় বড় বিভিন্ন গ্রুপ/ফ্যানপেজ আছে- সেগুলোতে প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারেন। তবে সরাসরি না করে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে যদি কাজ করেন তাহলেই দেখবেন প্রোডাক্ট সেলের পরিমাণ বেড়ে গেছে অনেক। যতো সেল, ততই কমিশন।
ক্রেইগলিস্ট
ক্রেইগলিস্ট (https://craigslist.org) বিশাল একটি সাইট। বাংলাদেশের এখানেই ডট কম বা বিক্রয় ডট কমের মতো অনেকটা। সেখানে যেকোনো কিছুর বিজ্ঞাপন এড করতে পারবেন ফ্রিতে। এখানেও একটু বুদ্ধিটা কাজে লাগান। আমাজনে বিভিন্ন অফারের/ডিসকাউন্টের প্রোডাক্টগুলো খোঁজে বের করুন। তারপর সেগুলোর লিংক শর্টেনার করে ক্রেইগলিস্টে এড দিন এভাবে: ৪০% ছাড়ে/৫০% ছাড়ে কিনুন আপনার বেবির জন্য একটি চমৎকার খেলনা। যে খেলনাটির এই এই ভালো দিক আছে। এরকম যেকোনো প্রোডাক্টই আপনি প্রমোটি করতে পারেন।
এভাবে দৈনিক এক ঘণ্টা কাজ করে মাস শেষে তিন হাজার ডলার ইনকাম করছেন এরকম ব্যক্তিকেও আমি চিনি। ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনও এই পদ্ধতিতে কাজ করিনি। আপনি চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
অন্যান্য
এভাবে খোঁজ-খবর করলে আরও অনেক অনেক ওয়ে বের হয়ে পড়বে। একটু চিন্তা করুন। মাথাটা একটু কাজে লাগান। দেখবেন আরও আরও কত কত পদ্ধতি আপনার মাথায় অহর্নিশ ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু খবরদার! সবগুলো নিয়ে কাজ করতে যাবেন না। তাহলে একেবারে মাখিয়ে ফেলবেন। যেকোনো একটা দিক নিয়ে শুরু করুন। ধৈর্য়্য ধরে কাজ করে যান। ইনশাল্লাহ সফলতা পাবেনই।
দেখুন, ৫০০ ডলার হলেই আমাদের দেশে যথেষ্ট ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য। আমাদের দেশের যারা বড় চাকরি করে তারাও অনেকে ৪০ হাজার টাকা মাস শেষে বেতন পায় না। আর আপনি জানেন ৪০ হাজার টাকা দামের একটা চাকরি পাওয়া কতটা কষ্টকর। তো সেই ৫০০ ডলার বা ৪০ হাজার টাকা আপনি কি মনে করেন খুব সহজেই ইনকাম করে ফেলবেন? ব্যাপারটা কি তাই?
কিন্তু আমি মনে করি সহজ না হলেও, অন্তত ৪০ হাজার টাকা দামের চাকরি পাওয়ার চেয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে মাসে ৫০০ ডলার ইনকাম করা সহজ। এই চেইন টিউনটা শেষ করতে পারলে সেটা আপনার কাছেও মনে হবে, ইনশাল্লাহ।
সুতরাং আমি অনুরোধ করবো- গালাগালি না করে, ধৈর্য়্য ধরে এই চেইন টিউনটা পড়ে যান। শুধু পড়াতেই শেষ করবেন না। যেভাবে যেখানে যা বলা হয়েছে সেখানে সেভাবেই প্রাকটিক্যাল কাজগুলোও করবেন। দেখবেন রিটার্ন পাবেনই।
সর্বশেষ কথা
অনেকদিন পরে হলেও নতুন টিউন আপনাদের জন্য লিখতে পারলাম। পরবর্তী পর্বটাও দ্রুত লিখে ফেলবো ইনশাল্লাহ। কারণ পরের পর্বের ইংরেজিটা লিখে ফেলেছি। সুতরাং বাংলাটাও দেরি হবে না। যারা ইংরেজিটা দেখতে চান তারা এটা পড়তে পারেন: Design Your Niche Site within Short Time in Perfect Way.
তো আজকে এই পর্য়ন্তই থাকলো। ভালো থাকুন, সাথেই থাকুন।
http://www.techtunes.com.bd/tutorial/tune-id/427807
No comments:
Post a Comment