অটোক্যাড হচ্ছে একটি ইন্জিনিয়ারিং ডিজাইন প্রোগ্রাম। এর মাধ্যমে ডিজাইনার ও টেকনিশিয়ানরা সহজেই
দ্বিমাত্রিক(2D) এবং ত্রিমাত্রিক (3D) ডিজাইন তৈরি করতে পারে বা কোনো যন্ত্রের স্থানান্তরযোগ্য পার্টস ডিজাইন করতে পারে। স্থাপত্যশিল্প ও ইন্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে অটোক্যড বর্তমানে গুরুত্বপূর্ন স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে বড় বড় স্থাপনার ডিজাইন প্রথমে কম্পিউটারের মাধ্যমে করা হয় এবং সেই অনুযায়ী স্থাপত্য নির্মান করা হয়। ইন্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে যে কোনো খুটিনাটি বিষয় অটোক্যাড এর মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া যায় এতে অর্থ, শ্রম ও সময় সবকিছুরই সাশ্রয় হয়। অটোক্যাড সফটওয়্যারটি অত্যন্ত ইউজার ফ্রেন্ডলি সফটওয়্যার এবং এটি জনপ্রিয় প্রোগ্রামিয় ল্যাঙ্গুয়েজ C++ দিয়ে তৈরি। অটোক্যাড ব্যাবহার করে সময়, শ্রম ও অর্থের সাশ্রয় হয় বলেই সারাবিশ্বে এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। সারা বিশ্বে বিশেষকরে মধ্যপ্রাচ্যে অটোক্যাড ডিজাইনারদের চাহিদা অনেক বেশি। এই টেকনোলজির যুগে শুধুমাত্র ইন্জিনিয়ারিং জানা থাকলেই চলবে না সাথে প্রয়োজন অটোক্যাড এর ওপর পরিপূর্ন দখল নয়তো প্রতিযোগীতার বাজারে আপনি পিছিয়ে পড়বেন। বাংলাদেশেরও অধিকাংশ ইন্জিনিয়ারই তাদের কাজের জন্য অটোক্যাড ব্যাবহার করে। তাই যারা ইন্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার শুরু করছেন অথবা আগে থেকেই এই ক্ষেত্রে আছেন তারা দ্রুত অটোক্যাড এর পরিপূর্ন ব্যাবহার শিখে ইন্জিনিয়ার হিসেবে আপনার অবস্থান দৃড় করে ফেলুন। অটোক্যাড ব্যাবহারের সুবিধাগুলো এক নজরে দেখে নিন:ডিজাইনিং:
যে কোনো প্রকার ইন্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে ডিজাইনিং বা প্রটোটাইপিং একটি সময়সাপেক্ষ ও জটিল বিষয়। আবার ম্যাকানিকাল ইন্জিনিয়ারিং এর মতো ক্ষেত্রে যেখানে বিভিন্ন পর্টসের সমন্ময়ে একটি যন্ত্র তৈরি করা হয় সেক্ষেত্রে কাগজে ডিজাইন অনেক কঠিন। অটোক্যাডের সাহায্যে সহজেই সেই বিষয়গুলো পরীক্ষা করে দেখা যায় তাও আবার বিভিন্ন অবস্থা সাপেক্ষে। এর মাধ্যমে মুহুর্তেই একটি ডিজাইনে নতুন ইপাদান যুক্ত করে দেখা যায় আর ডিজাইনগুলো হয় ৩ডি অর্থাৎ বাস্তবভিত্তিক। এর মাধ্যমে একটি ডিজাইনের বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয় পরিবর্তন করে দেখা যায় যা বাস্তবে করা অনেক কঠিন। তাই সত্যিকারের স্থাপনা তৈরির আগেই এর পরিপূর্ন ডিজাইন তৈরি করে নেওয়া যায়।
খরচ বাঁচায়:
ইন্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষনা অনেক গুরুস্বপূর্ন বিষয়। কিন্তু সত্যিকারের স্থাপনা বা যন্ত্রপাতির ওপর পরীক্ষা নিরীক্ষা অনেক ব্যায়বহুল বিষয়। অটোক্যাডের মাধ্যমে সহজেই একজন আর্কিটেকচার তার মডেলের বিভিন্ন অংশ পরিবর্তন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পরেন। এতে নতুন নতুন আইডিয়া প্রতিফলন ঘটবে। যে কোনো কাজের পূর্বে এর নমুনা তৈরি করে সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করা যায়। এতে খরচ অনেক কমে যায়।
সময় বাঁচায়:
অটোক্যাড কাজের ক্ষেত্রে অর্থের পাশাপাশি অনেক সময়ও বাঁচায়। সত্যিকার নমুনা বা প্রটোটাইপ তৈরি করতে অনেক সময়ের প্রয়োজন কিন্তু অটোক্যাড এর কল্যানে অনেক দ্রত যে কোনো কিছুরই নমুনা ডিজাইন তৈরি করে ফেলা যায় যা ইন্জিনিয়ারদের অনেক মূল্যবান সময় বাঁচাতে সাহায্য করে। নমুনা ডিজাইনটির বিভিন্ন পরিবর্তনও খুব সহজেই ও দ্রুততার সাথে করে ফেলা যায়। যেখানে একটি প্রটোটাইপ তৈরি করতে অনেক সময় ব্যায় করতে হতো সেখানে অটোক্যাডের মাধ্যমে দ্রুততার সাথে নিখুত প্রটোটাইপ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।
যোগাযোগ ও একীভুতকরন:
ডিজাইনকৃত মডেল ডিজিটাল ফরম্যাট এ সংরক্ষন করার ফলে ইন্জিনিয়ারদের মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতার পথ আরও সুগম হয়েছে। একাধিক ইন্জিনিয়ার একটি ডিজাইন এর ওপর কাজ করে ডিজাইনটিকে পরিপূর্ন করতে পারে এবং টিমের অন্য যে কোনো ডিজাইনারের কাছেও সহজেই তা সেন্ড করতে পারে। বিশ্বায়নের এই যুগে পরষ্পরের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করা অনেক গুরুত্বপূর্ন। অটোক্যাড এর মাধ্যমে একজন ইন্জিনিয়ার সহজেই অন্য ইন্জিনিয়ারের সাথে তার ডিজাইনটির বিভিন্ন অংশ নিয়ে আলোচনা করতে পারে। অসংক্ষ্য আইডিয়ার সমন্ময়ে একটি পরিপূর্ন ডিজাইন তৈরি করা এখন অনেক সহজ।
ইন্জিনিয়ারদের নিজেদের সুবিধার জন্যই অটোক্যাড শেখা উচিৎ। অটোক্যাডের মাধ্যমে আমাদের দেশে কাজের পাশাপাশি বহির্বিশ্বেও রয়েছে কাজের সুযোগ।
No comments:
Post a Comment