অনেকে বর্তমানে এটুকু সচেতন যে, তাকে অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে হবে। বসে সময় নষ্ট করলে যে নিজের ক্ষতি, সেটা এখন অনেকেরই উপলব্ধিতে চলে আসছে। এখনও যাদের আসেনি, তাদের জন্য আমার এ লেখাটি।
যারা ক্যারিয়ারের ব্যাপারে সচেতন হয়েছেন, তাদের এখন প্রশ্ন কোনটি শিখবেন? কি শিখলে কাজ করতে পারবেন।
যে কোন কাজ জেনেই আপনি ভাল ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন। তবে, গ্রাফিকস, এসইও, ওয়েবডিজাইন, ইমেইল মার্কেটিং, অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও অ্যাডিটিং এগুলোর সবকয়টির চাহিদাই বেশি। কোনটি আপনি শিখবেন সেটির উত্তর আপনার নিজেকে ঠিক করতে হবে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নাকি ব্যাংকার কোনটা হবো, সেটির উত্তর যেমন দেওয়াটা খুব কষ্টকর, তেমনি এ উত্তরটি দেওয়াও কষ্টকর। কারণ সবগুলোই একইরকম ভাল সেক্টর।
তবে আমি সবগুলোর ক্যারিয়ার নিয়ে জানাতে পারি, যাতে সবার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়।
১। এসইও: যে কোন কোম্পানীর জন্য মার্কেটিংটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি কাউকে আলাদাভাবে বলার প্রয়োজন নাই মনে হয়। মার্কেটিং হচ্ছে ১টা কোম্পানীর জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন বিষয়। এ মার্কেটিং অনলাইনে করলে সেটিকেই এসইও বলে। অর্থাৎ ১টা কোম্পানীর পুরো ব্যবসা নির্ভর করে, এসইও এক্সপার্টদের উপর।
এসইও কি এবং তার ক্যারিয়ার কেমন, সেটি জানতে আমার লেখা এ লিংকটি দেখতে পারেন:http://genesisblogs.com/featured/595
এসইও জেনে কোন কোন সেক্টরের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন, সেটি জানতে এ পোস্টটি সাহায্য করবেঃ
২। গ্রাফিক ডিজাইন: যে কোন কোম্পানীর লোগো, ব্রুশিয়ার থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রিন্টিং জাতীয় সকল প্রোডাক্ট গ্রাফিক ডিজাইনাররা তৈরি করেন। আবার যে কোন ওয়েবডিজাইনের শুরুতে কিংবা ভিডিও অ্যাডিটিংয়ের কাজে কিংবা অ্যানিমিশন প্রজেক্টের ক্ষেত্রেও গ্রাফিক ডিজাইনারদের প্রয়োজন। এমনকি এসইও প্রজেক্টের গ্রাফিক ডিজাইনারদের সাহায্য প্রয়োজন হয়। এবার নিজেরেই মনে মনে বের করে নিন, গ্রাফিক ডিজাইনারদের জন্য কি পরিমাণ কাজ থাকতে পারে এবং কখনও তাদের কাজের ঘাটতি হবে কিনা।
গ্রাফিক ডিজাইনারদের জন্য অনলাইনে কাজের সেক্টরগুলো জানার জন্য আমার এ লেখাটি পড়তে পারেন।
কিভাবে নিজেকে সফল গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে প্রস্তুত করবেন, সেটির গাইডলাইন দিয়ে আমি ২পর্বের আর্টিকেল লিখেছিলাম। সেটি লিংক:
১ম পর্ব : http://genesisblogs.com/tips-2/9877
২য় পর্ব: http://genesisblogs.com/tips-2/10038
৩। ওয়েবডিজাইন: ওয়েবডিজাইনারদের সুবিধা হলো, এ সম্পর্কিত কাজগুলো যোগাড় করার জন্য খুব বেশি প্রতিযোগীতাতে পড়তে হয়না। সেজন্য ওয়েবডিজাইনার হলে ক্যারিয়ার গড়ে তোলাটা অপেক্ষাকৃত সহজ। মার্কেটপ্লেসগুলোতে এ কাজগুলোর প্রতি ঘন্টার রেট ও গ্রাফিকসের কাজের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
ওয়েবডেভেলপার কিভাবে হবেন, এ সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার গাইডলাইন দিয়ে একটি আর্টিকেল রয়েছে আমার।
৪। ইমেইল মার্কেটিং: ইমেইল মার্কেটিংয়ের কাজটি উপরের সবগুলোর তুলনায় অনেক সহজ। মার্কেট প্লেসে আয়, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফলতার জন্য, কিংবা নিজের বা অন্যের কোন ব্যবসার প্রমোশনের কাজের জন্য এটি শিখতে পারেন। কিংবা গ্রাফিক, ওয়েব ডিজাইনের কাজ যোগাড় করার জন্য ইমেইল মার্কেটিংয়ের জ্ঞানটি অনেক বেশি উপকারে আসবে।
ইমেইল মার্কেটিংয়ের ক্যারিয়ার গাইডলাইন এবং কাজের ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আমার লেখা রয়েছে।
৫। ভিডিও এডিটিং : ভিডিও এডিটিং কাজগুলো যেমন মজার, তেমনি কাজটি সহজ আবার আয় করার সুযোগও বেশি। মূলত টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জন্য ভিডিও এডিটিং প্রয়োজন হলেও বর্তমানে ইউটিউবের যুগে ভিডিও এডিটিংয়ের কাজের সেক্টর অনেক বেড়ে গেছে।
ভিডিও এডিটরদের ক্যারিয়ারের ক্ষেত্র নিয়েও একটা লেখা লিখেছি।
৬। অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট : যারা প্রোগ্রামিংয়ে মোটামুটি ধারণা আছে, তাদের জন্য আমার সবসময়ের পরামর্শ থাকে অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট শিখে নিন। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ সব সময় এ সেক্টরটির অনেক চাহিদা থাকবে। মার্কেটপ্লেসগুলোতে এ ধরনের কাজের প্রতিযোগীতা কম থাকে এবং কাজের প্রতি ঘন্টা রেটও অনেক বেশি হয়।
জেনেসিসব্লগসে এ বিষয়ে একটি লেখা পোস্ট করা হয়েছে। সেটি পড়লে এ বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে।
৭। নেটওয়ার্কিং (CCNA): CCNA সার্টিফাইড হয়ে অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ থাকলেও এ বিষয়ে দক্ষ হতে পারেন , যারা লোকাল মার্কেটের সবচাইতে চাহিদা সম্পন্ন কাজের সেক্টরগুলোতে (ব্যাংক, টেলিভিশন, টেলিকমিউনিকেশন) চাকুরী করতে আগ্রহী তারা।
এ সেক্টরের ক্যারিয়ার নিয়ে বিস্তারিত গাইডলাইন পাবেন আমার লেখাটি পড়ে।
৮। আর্টিকেল রাইটিং: লেখালেখি শিখেও অনলাইনে বড় ক্যারিয়ার গড়ে তোলাটা খুব সহজ। একজন ব্লগ রাইটারের অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ব্যাপক চাহিদা।
লেখালেখির কাজ শিখার জন্য গাইডলাইন পাবেন এরকম পোস্টের লিংক দিচ্ছি।
আর্টিকেল রাইটিং বিষয়ে আমার ১টি ক্লাশের ভিডিও দেখেও কিছু গাইডলাইন পাবেন।
ভিডিও লিংক: http://youtu.be/lLOYQSK-PtY
আর্টিকেল রাইটিং করে আয়ের সেক্টরগুলো নিয়ে একটি পোস্ট আছে।
৯। ভিডিও চ্যানেল তৈরি: ইউটিউবে নিজের একটি ভিডিও চ্যানেল তৈরি করে সেই চ্যানেলের মাধ্যমেও লাইফটাইম আয় করতে পারেন। এ বিষয়ে জেনেসিসব্লগসের জনপ্রিয় টিউনার, হাবিবুর রহমান দীপু তার লেখার মাধ্যমে বিশাল গাইডলাইন দিয়েছিন।
১০। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: অ্যাফেলিয়েটের মাধ্যমে অনেকে আয় করতে চায়। এ সেক্টরে আয় অনেক বেশি। জানা দরকার এসইও এবং অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কিত জ্ঞান। ইংরেজি জ্ঞানতো অবশ্যই অনেক বেশি থাকতেই হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার এবং সফল হওয়ার গাইডলাইন নিয়ে একটি পোস্ট রয়েছে জেনেসিসব্লগসে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রিসোর্স লিংক: http://genesisblogs.com/freelancing-2/5964
১১। অনলাইনে উদ্যোক্তা: কোন কিছুই পারেননা। শুধুমাত্র ফেসবুক চালাতে পারেন। তাহলে ফেসবুককে ব্যবহার করে আপনিও শুরু করতে পারেন সম্পূর্ণ নিজের ব্যবসা। নিজেই তখন একজন উদ্যোক্তা।
ফেসবুকের মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন পাবেন আমার দুই পর্বের লিখাতে।
উপরের সব লিংকগুলো পড়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নিন, আপনি কোন পথে হাটবেন। আপনার পাশের কেউ এক পথে সফল হয়েছেন মানে যে আপনিও সফল হবেন সেই পথে সেটি নাও হতে পারে। সেজন্য নিজের বিবেক দিয়ে সিদ্ধান্ত নিন।
কাজ শিখার এবং সফল হওয়ার গাইডলাইন
সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন। এখন কিভাবে কাজ শিখবেন, সেটি বড় প্রশ্ন। সেই ব্যাপারেও সঠিক গাইডলাইন দিয়ে একটি পোস্ট করেছিলাম।
অনেকে কাজ শিখেও বসে আছে। সফল হতে পারছেন না। কেন পারছেন না, সেটিও খুজে বের করার চেষ্টা করেছি আমার লেখাতে।
ওডেস্ক মার্কেটপ্লেসে কাজ করার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন দিয়ে তিন পর্বের লেখা রয়েছে আমার। সেটি পড়েও যে কেউ ওডেস্কে কাজ শুরু করা এবং সফল হতে পারবেন।
আরও একটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস ফাইভারেও যারা কাজ শুরু করার চেষ্টা করছেন কিন্তু সফল হতে পারছেন না, তাদের জন্য অবশ্যই সফল হওয়ার জন্য গাইডলাইন দিয়ে লিখেছিলাম। যেটা অনুসরণ করে ইতিমধ্যে অনেকে সফলও হয়েছেন।
এক লেখাতে সবগুলো গাইডলাইন দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি, এবার সবাই কাজ শুরু করতে পারবেন। আর বসে কেউ থাকবেন না। এখনই মাঠে নামার সময়। সব সময় আমি পাশে আছি। আমার ফেসবুকে যোগাযোগ করতে পারেন। কিংবা ক্রিয়েটিভ আইটিতে নিয়মিত আমরা ক্যারিয়ার গড়ার সবগুলো বিষয় নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে সেমিনার আয়োজন করে যাচ্ছি। সবার সুবিধার জন্য সেসব সেমিনারগুলোতে সম্পূর্ণ ফ্রি অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়। সেই সব সেমিনারগুলোর তথ্য জানার জন্য ক্রিয়েটিভ আইটির অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপ (https://www.facebook.com/groups/creativeit) এবং ফেসবুকে পেজের (https://www.facebook.com/CreativeBangladesh) মেম্বার হয়ে থাকুন এবং অ্যাক্টিভ থাকুন। সব ধরনের সহযোগিতা পাওয়া, সব ধরনের গাইডলাইন পাওয়ার পরও যদি আপনি বেকার থাকেন কিংবা অভাবী থাকেন, সেটির জন্য এবার কাকে দায়ি করবেন? এবার নিজের কাছেই নিজেকে প্রশ্ন করুন। আর যারা এ পোস্টটি পড়বেন, তারা আশা করি অবশ্যই পোস্টটির লিংকটি শেয়ার করবেন।
No comments:
Post a Comment